ওঁ ভগবতে শ্রী শ্রী রামচন্দ্রায় নমঃ
জয় রাম জয় গুরু জয় গোপাল জয় সত্যনারায়ণ জয় গোবিন্দ
সকলি সময়ে হইয়া থাকে। জন্ম, মৃত্যু, জরা ব্যাধি, সুখ দুঃখ সকলি এ সংসারে ভোগ করিতেছে।....... জন্ম হইলেই মৃত্যু হইবে, সেই মৃত্যুর পরে আর তাহার জন্য শোক করিতে হয় না। অর্জুনের পুত্র অভিমন্যু স্বয়ং কৃষ্ণ অভিমন্যুর মাতুল, এ সত্ত্বেও অকালে কালের হাত এড়াইতে পারে নাই। ইহা জানিয়া সকল শোক ত্যাগ করিবে।
বেদবাণী - শ্রীশ্রীরামঠাকুর
" অশৌচের মধ্যে মা তো আপনাদের সকলকেই অন্নজল দেন। আমাকে দিতে এত দ্বিধা কেন ? আমাকে কি আপনাদের একজন বলে ভাবতে পারেন না ? আমাকে দূরে রাখতে পারলেই কি আপনাদের আনন্দ ? "
শ্রীশ্রী রামঠাকুর।
কলিকাতা থেকে দেশে ফিরে আসার কিছুদিন পরে আচার্য মহাশয় সঙ্কটপূর্ন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলেন । তার একটি অল্প বয়স্ক পুত্র সন্তান কঠিন রোগে আক্রান্ত ।
স্থির হয়ে শোক সন্তপ্ত হৃদয়ে বসেছিলেন আচার্য মহাশয় । বয়স্ক পুরুষরা সকলে শ্মশানে গিয়েছেন শবদাহের ব্যবস্থা করতে । বাড়ীটি প্রায় নির্জন , শুধু পুত্র শোকাতুরা জননীর কণ্ঠে একটানা কান্নার সুর বাতাসে ভেসে আসছিল ।
যখন বেলা সাড়ে এগারটা বাজল , তখন আচার্য মহাশয় হারান সম্বিৎ ফিরে পেলেন । ওহো , আজ তো বাড়িতে রান্না হবে না । ঠাকুর মহাশয়ের ভোগের কোন ব্যবস্থাও করা
যাবে না । তাড়াতাড়ি কোঁচার খুঁটখানি গায়ে টেনে একআনা পয়সা নিয়ে তিনি মিষ্টির দোকান থেকে দুইটা সন্দেশ নিয়ে এলেন ।
পরিষ্কার একটি রিকাবীতে সন্দেশ দুইটি সাজিয়ে ঠাকুর মহাশয়ের শ্রীপটের সামনে রাখলেন । পরে কলসী থেকে জল ঢেলে গ্লাসটি পূর্ন করলেন তিনি । কিন্তু জলপূর্ন গ্লাসটি আর ঠাকুর মহাশয়ের শ্রীপটের সামনে রাখতে পারলেন না ।
তাদের তো মৃতাশৌচ , তার ছোঁয়া জল এ অবস্থায় কি করে ঠাকুর মহাশয়কে পান করার জন্য দিতে পারেন !
দুঃসহ বেদনায় ধুঁকছিলেন সারা পরিবারটি ।
কোন রকমে ঘরের কাজ হচ্ছিল বটে , কিন্তু মন সকলেরই ভাঙ্গা । মৃত পুত্রটির জনক জননীর অবস্থা অতি করুণ । শোকমগ্ন যখন সমগ্র পরিবারই , সেই সময়েই একদিন ঠাকুর মহাশয় এসে উপস্থিত হলেন ।
আগ্রহ ভরে পারিবারের সকলেই ঠাকুর মহাশয়ের কথা শুনলেন । পুত্রশোকের অসীম দগ্ধরেখা চিত্ত থেকে অনেকটা বিলীন হয়ে গেল আচার্য মহাশয়ের । একান্তে আচার্য মহাশয়কে পেয়ে ঠাকুর মহাশয় বললেন ,
পুত্রের মৃত্যুর দিন সন্দেশ দিলেন , জল দিলেন না কেন ?
শোকমলিন মুখ আচার্য মহাশয়ের উজ্জ্বল হয়ে উঠল ।
তবে তো জল যে তিনি দেন নি , সেটা ঠাকুর মহাশয়ের অজানা নয় । আর ঠাকুর মহাশয়ের পটের সামনে যা কিছু নিবেদিত হয় তাহাও ব্যর্থ নয় । তাঁহার দৃষ্টিপাতে সে ভোগ সার্থক হয়ে উঠে ।
বিস্ময়ে ঘোর কাটিয়ে কিছু পরে ভগ্নকণ্ঠে তিনি বললেন , আমাদের তখন মৃতাশৌচ চলছে , সে সময়ে আমাদের ছোঁয়া কোন কিছুই তো অন্যকে দেওয়া যায় না । সন্দেশ যে রেখেছিলাম সেটা বড় ভুল হয়ে গেছে , কিন্তু উপায় ছিল না । এইবার দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তো আর ফিরিয়ে নেওয়া যায় না ।
বড় অন্যায় হয়ে গেছে ।
ঠাকুর মহাশয় বললেন ,
" অশৌচের মধ্যে মা তো আপনাদের সকলকেই অন্নজল দেন। আমাকে দিতে এত দ্বিধা কেন ? আমাকে কি আপনাদের একজন বলে ভাবতে পারেন না ? আমাকে দূরে রাখতে পারলেই কি আপনাদের আনন্দ ? "
পুত্রশোকে আচার্য মহাশয় দুঃখ বোধ করছেন , কিন্তু অশ্রুজল রুদ্ধ করে রেখেছিলেন পাছে অন্যের মধ্যেও এটা সংক্রমিত হয় এই আশঙ্কায় ।
এবার ঠাকুর মহাশয় তাদের গৃহে আসার পর তাঁহাকে তিনি প্রণাম পর্য্যন্ত করেন নি । মৃতাশৌচ প্রণাম নিষিদ্ধ এই সংস্কার বশেই । কিন্তু এখন আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলেন না । দুই নয়নের জলে বহু জন্মের সংস্কার ধুয়ে গেল । লুটিয়ে পড়লেন তিনি ঠাকুর মহাশয়ের চারুচরণ দুইখানিতে ।
জয় রাম
ফনীভূষণ চক্রবর্ত্তী ।
শ্রুতিতে রামঠাকুর ।
যাহা কিছু দেখেন
যাহা কিছু শোনেন সবই ভুল সবই মিথ্যা,
একমাত্র হরিনামই সত্য।
মোহ হইতে কর্তৃত্বের উদয় হয়।
আমি আমার ইহাই কর্তৃত্ব,
কাউকে কিছু দেখাইতে যাবেন না,
কাহারো কিছু দেখিয়া মনকে অস্থির করিবেন না,
যার যার ভাগ্যে যাহা কুলন করে
তাহাই তাঁহারা ভোগ করে, ইহাই ক্ষণিকের ইন্দ্রিয় মাত্রাষ্পর্শীয় সুখ কিছুক্ষণ পরেই মিলাইয়া যায়।
সত্যনারায়নের সেবকের ভাগ্যও নাই ভোগও নাই, অভাব ও নাই, তেমন কিছু প্রয়োজন ও হয়না।
প্রয়োজন না থাকাকে গুরু প্রাপ্তি বলে।
ভোগ্য সামগ্রীতে জড়াইবেন না, কে কি বললো তাহাতে মন দিবেন না, আপনাকে দেখে কে কি ভাবলো তাহাও ভাববেন না, যত পারেন নামের মধ্যে মনকে ডুবিয়া রাখিবার চেষ্টা করিবেন
কারণ এই মন চির চঞ্চল, ইহাকে কিছুতেই তুষ্ট করা যায় না, স্থির করা যায় না।
নামেই আপনাকে উদ্ধার করিবেন, ইহা ছাড়া আর যতরকম উপায় অবলম্বন তাহা সবই দক্ষযজ্ঞ।
যথা সম্ভব উপস্থিত কর্ম সকল নির্বাহ করিবার চেষ্টা করিবেন।
অজ্ঞানীগন যাহাতে জাগ্রত থাকেন, জ্ঞানীগন তাহাতে নিদ্রিত থাকেন।
এই দেহ রূপ লাবন্য নিত্য ক্ষয়শীল।
জয় রাম জয় রাম
ওঁ ভগবতে শ্রী শ্রী রামচন্দ্রায় নমঃ
Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ(SriSriramthakur O gan Ganer vhovon Youtube channel)
on
May 23, 2023
Rating:
Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ(SriSriramthakur O gan Ganer vhovon Youtube channel)
on
May 23, 2023
Rating:






.jpg)
No comments: