শ্রী শ্রী ঠাকুরের কনিষ্ঠ ভ্রাতা ছিলেন লক্ষণ ঠাকুর | ঠাকুর ও লক্ষণ বাবা দুই যমজ ভ্রাতা | উভয়ের জন্ম তারিখ ২১ শে মাঘ , ১২৬৬ বঙ্গাব্দ { ২ রা ফেব্রুয়ারী, ১৮৬০ সাল }

বৃহস্পতিবার | সেইদিন ছিল মাঘী শুক্লা দশমী তিথি | কমলা -রাধামাধব চক্রবর্তী র চারিপুত্র কালীকুমার, জগবন্ধু,শ্রী রাম ও লক্ষণ ঠাকুর এবং একমাত্র কন্যা কাশী মণি দেবী | হরিনাম শ্রবণ করিলেই লক্ষণ ঠাকুর র শরীর রোমাঞ্চ হইতো এবং তিনি আত্ম মগ্ন হইয়া যাইতেন | প্রায় দিন ই কাউকে না জানিয়া কীর্তনের আসরে দিন-রাত কাটাইয়া আসিতেন | কখনো কখনো তার সমবয়সী রা তাকে 'হরিবোল' বলা মাত্রই লক্ষণ বাবা আনন্দের সহিত হাততালি দিয়া দুই বাহু তুলিয়া হরিবোল হরিবোল বলিয়া নাচ করিতে করিতে ভাব উন্মাদ হইয়া ভূমি তে পরিয়া গড়াগড়ি খাইতেন | এইজন্যই তারনাম হইয়াছিল হরিবোলা ঠাকুর | গ্রামবাসীদের কাছে তিনি হরিবোলা ঠাকুর নামে পরিচিত ছিলেন | ঠাকুর যখন গৃহত্যাগ করে চলে গেলেন তখন এই গান প্রায়ই লক্ষণ ঠাকুরের মুখে শোনা যেতো ,
" মন তুই গুরু চিনলি না
একই গর্ভে জন্ম নিলি
একি মায়ের দুধ খেলি
ওরে মন , তবু তুই গুরু চিনলি না |"
তিনি ঠাকুর মতো চিরকুমার ছিলেন | গৃহে থাকিয়া তিনি দেশীয় গাছগাছড়া দ্বারা আশ্চর্য রকমের ঔষুধ তৈরি করিয়া সর্বসাধারণের মধ্যে বিলাইতেন | দুই ভাই রাম লক্ষণ জঙ্গল যাইয়া লতাপাতা কুড়িয়ে আনিয়া মাকে সিদ্ধ করিয়া দিতে বলিতেন মা তাই করতেন | বৈষ্ণব দেখিলেই তিনি প্রসাদ পাইবার জন্য নিমন্ত্রন করিতেন , এইরকম নিমন্ত্রন তার নিত্য -নৈমিত্তিক ব্যাপার ছিলো | শ্রী শ্রী ঠাকুর যখনই লক্ষণ বলে ডাকদিতেন তিনি শত কাজ ফেলিয়া হাজির হইতেন | শিশুবেলায় মায়ের হাতধরে যখন দুই ভাই রাম লক্ষণ রামায়ণ শুনতে যেতেন বাড়ি ফিরবার সময় রাম মা কে বলতেন , মা লো সারা রামায়ণটার মধ্যে তো শুধু আমার আর লাক্ষার কথা কয় |'
" মা হাসিয়া বলিতেন হ তোরা হলি রামায়ণ রাম আর লক্ষণ |' শ্রী শ্রী ঠাকুর শ্রী হস্ত লিখিত রামায়ণ যাদবপুর কৈবল্যধাম প্রত্যেক সপ্তাহের মঙ্গলবার গুরুবোন রা পাঠ করে থাকেন |
পত্রে যখন শ্রী শ্রী ঠাকুর মৃত্যু সংবাদ পাইলেন " ঠাকুর বলেছিলেন, লক্ষণ বাবার লোকালয় কোনো দেনাপাওনা নাই তার জন্য তাহাকে আর লোকালয় আর আসতে হবেনা | দেহত্যাগ করার সময় তাহার বয়স হয়েছিল অনুমানিক ৫৭ - ৫৮ বৎসর |
ঠাকুর জন্মস্থান ফরিদপুর জে
No comments: