গুরু ভাই বোনসহ সকল সনাতনী ভাই বোনদের জানাই স্বাগত ,উদ্দেশ্য গুরু দেবের অমৃত বানী সকলের মাঝে প্রচার করা।

 ঠাকুর একদিকে পরম বৈষ্ণব হয়েও কৈবল্য মুক্তির পন্থা নির্দেশ করেছেন। যাঁরা গোঁড়া বৈষ্ণব তাঁরা হয়তো মুক্তির প্রসঙ্গে আঁতকে উঠবেন। কিন্তু সত্যের মর্য্যাদা লঙ্ঘন ক'রে ভাবাবেগবশে তো তিনি কিছু বলতে পারেন না। ঠাকুর এক দিকে প্রেম ভক্তির গুণকীর্ত্তন করেছেন, 'নাম ধর্ম্মের' প্রচার করেছেন, অপরদিকে মুক্তির স্বরূপ সম্বন্ধেও বহুবার বলেছেন। তিনি কোনো "বাদ"-এর পক্ষপাতী নন, তাঁর সত্য-নির্ধারণে সকল "বাদ"-এর সমন্বয় সাধিত হয়েছে। বৈষ্ণবের পক্ষে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা পাপ। এটা ভক্তি সাধনার উপজীব্য রস নয়, কিন্তু সকল সাধনার পরিণাম সেই কৈবল্য, অভীষ্ট ফলশ্রুতি না হলেও অনিবার্য্য ফল। বৈষ্ণব মুক্তি চায়না কেন? তার কারণ, মুক্তির আকাঙ্ক্ষা থাকলে ভক্তিরস ক্ষুন্ন হয়, প্রেমবিরহের অফুরন্ত উচ্ছ্বাস ব্যাহত হয়ে পড়ে। যদি কেউ জানতে পারে যে ওসব প্রচেষ্টার শেষ আছে তবে প্রচেষ্টার মাধুর্য্যরস উপচিত হয় না। তা'ছাড়া মুক্তির পিপাসায় স্বার্থবুদ্ধি নিহিত আছে। প্রেমভক্তির লীলা অনন্ত ধ'রে নিয়েই বৈষ্ণবকে চলতে হয়। কিন্তু বৈষ্ণব যতই অনন্তলীলার রসে মেতে উঠুন না কেন, মুক্তি তাঁর সেবাকার্য্যে বিরত থাকে না। কারণ 'পাশমুক্তো ভবেৎ শিবঃ।' অনুভূতিশূন্য ইচ্ছাশূন্য যে অবস্থা তাতে বিরহ-মিলনের প্রয়াস নেই। মুক্তি আসলে কী? আসলে কর্তৃত্বাভিমান বা কামনা বাসনা মুক্তিই মুক্তি, ঠাকুর যা'কে দেহমুক্তি বলেছেন। আত্মেন্দ্রিয়-প্রীতি-ইচ্ছাকে সত্যনারায়ণের শ্রীচরণে সিন্নিদান করলেই জীব হয়ে শতবার্ষিকী স্মারক গ্রন্থ 

 

 

ঠাকুরের দৃষ্টিতে কৈবল্য মুক্তি ও বৈষ্ণব ভাবনা

🎙️ Intro:

"নমস্কার শ্রোতারা, স্বাগত আপনাদের প্রিয় পডকাস্টে। আজকের বিষয় - 'ঠাকুরের দৃষ্টিতে কৈবল্য মুক্তি ও বৈষ্ণব ভাবনা'। ঠাকুর শ্রী শ্রী রামঠাকুর একদিকে পরম বৈষ্ণব হয়েও কৈবল্য মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। বৈষ্ণব দর্শনের সঙ্গে মুক্তির এই অবস্থানের সম্পর্ক কী? সেটাই আমরা আজ আলোচনা করব। আসুন, ঠাকুরের বাণী এবং তার অন্তর্নিহিত ভাবনার দিকে গভীরভাবে নজর দিই।"


🎙️ মূল আলোচনা:

 ঠাকুর একদিকে পরম বৈষ্ণব হয়েও কৈবল্য মুক্তির পন্থা নির্দেশ করেছেন। যাঁরা গোঁড়া বৈষ্ণব তাঁরা হয়তো মুক্তির প্রসঙ্গে আঁতকে উঠবেন। কিন্তু সত্যের মর্য্যাদা লঙ্ঘন ক'রে ভাবাবেগবশে তো তিনি কিছু বলতে পারেন না। ঠাকুর এক দিকে প্রেম ভক্তির গুণকীর্ত্তন করেছেন, 'নাম ধর্ম্মের' প্রচার করেছেন, অপরদিকে মুক্তির স্বরূপ সম্বন্ধেও বহুবার বলেছেন। তিনি কোনো "বাদ"-এর পক্ষপাতী নন, তাঁর সত্য-নির্ধারণে সকল "বাদ"-এর সমন্বয় সাধিত হয়েছে। বৈষ্ণবের পক্ষে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা পাপ। এটা ভক্তি সাধনার উপজীব্য রস নয়, কিন্তু সকল সাধনার পরিণাম সেই কৈবল্য, অভীষ্ট ফলশ্রুতি না হলেও অনিবার্য্য ফল। বৈষ্ণব মুক্তি চায়না কেন? তার কারণ, মুক্তির আকাঙ্ক্ষা থাকলে ভক্তিরস ক্ষুন্ন হয়, প্রেমবিরহের অফুরন্ত উচ্ছ্বাস ব্যাহত হয়ে পড়ে। যদি কেউ জানতে পারে যে ওসব প্রচেষ্টার শেষ আছে তবে প্রচেষ্টার মাধুর্য্যরস উপচিত হয় না। তা'ছাড়া মুক্তির পিপাসায় স্বার্থবুদ্ধি নিহিত আছে। প্রেমভক্তির লীলা অনন্ত ধ'রে নিয়েই বৈষ্ণবকে চলতে হয়। কিন্তু বৈষ্ণব যতই অনন্তলীলার রসে মেতে উঠুন না কেন, মুক্তি তাঁর সেবাকার্য্যে বিরত থাকে না। কারণ 'পাশমুক্তো ভবেৎ শিবঃ।' অনুভূতিশূন্য ইচ্ছাশূন্য যে অবস্থা তাতে বিরহ-মিলনের প্রয়াস নেই। মুক্তি আসলে কী? আসলে কর্তৃত্বাভিমান বা কামনা বাসনা মুক্তিই মুক্তি, ঠাকুর যা'কে দেহমুক্তি বলেছেন। আত্মেন্দ্রিয়-প্রীতি-ইচ্ছাকে সত্যনারায়ণের শ্রীচরণে সিন্নিদান করলেই জীব হয়ে শতবার্ষিকী স্মারক গ্রন্থ

 

🔹 প্রেম, ভক্তি ও মুক্তি:
ঠাকুর শ্রী শ্রী রামঠাকুর সর্বদাই প্রেম-ভক্তির মহিমা গেয়েছেন, "নাম ধর্মের" প্রচার করেছেন, কিন্তু তার সঙ্গে মুক্তির স্বরূপ সম্পর্কেও তিনি আলোকপাত করেছেন। তিনি কোনো নির্দিষ্ট "বাদ"-এর পক্ষপাতী ছিলেন না, বরং সকল দর্শনের মধ্যে সমন্বয় সাধন করেছেন।

🔹 বৈষ্ণব ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষা:
গোঁড়া বৈষ্ণবরা সাধারণত মুক্তির কথা শুনলেই আঁতকে ওঠেন, কারণ বৈষ্ণব সাধনায় মুক্তির আকাঙ্ক্ষা পাপ বলে বিবেচিত হয়। কেন? কারণ, মুক্তির আকাঙ্ক্ষা থাকলে ভক্তিরস নষ্ট হয়, প্রেমের গভীর অনুভূতিতে বিঘ্ন ঘটে। বৈষ্ণবরা অনন্ত প্রেম-লীলা ধারণ করে এগিয়ে চলে।

🔹 তাহলে মুক্তি কী?
ঠাকুরের মতে, মুক্তি মানে দেহমুক্তি বা কামনা বাসনা মুক্তি। সত্যনারায়ণের চরণে আত্মসমর্পণের মাধ্যমেই সত্যিকারের মুক্তি লাভ সম্ভব। তিনি বলেছেন, "পাশমুক্তো ভবেৎ শিবঃ" – অর্থাৎ, বন্ধনমুক্ত হলেই শিবত্ব লাভ করা যায়। এই মুক্তি হলো কর্তৃত্বাভিমান, কামনা, বাসনা থেকে মুক্তি, যেখানে ইচ্ছাশূন্যতা এবং অনুভূতিহীনতার এক পরম অবস্থা বিরাজ করে।

🔹 বৈষ্ণবের সাধনার পরিণতি কী?
যদিও বৈষ্ণব মুক্তির জন্য সাধনা করেন না, তবে তাঁদের ভক্তির সাধনার শেষ পরিণতিও মুক্তির মধ্য দিয়েই ঘটে। এটি অভীষ্ট ফলশ্রুতি না হলেও, এক অনিবার্য ফল হিসেবে প্রতিভাত হয়।


🎙️ সমাপ্তি:

"আজকের আলোচনায় আমরা দেখলাম, ঠাকুর শ্রী শ্রী রামঠাকুর একদিকে পরম বৈষ্ণব হয়েও মুক্তির পথের সন্ধান দিয়েছেন। তাঁর দর্শন কোনো একপেশে চিন্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সকল দর্শনের সমন্বয় ঘটিয়ে তিনি সত্যের প্রকাশ ঘটিয়েছেন। তাই প্রেম, ভক্তি এবং মুক্তির এই রহস্যময় যোগসূত্র আমাদের ভাবিয়ে তোলে।

আপনাদের মতামত জানাতে ভুলবেন না। পরবর্তী পর্বে আবারও নতুন একটি বিষয়ের সঙ্গে ফিরে আসব। ততদিন পর্যন্ত ভালো থাকুন, ঠাকুরের কৃপা সর্বদা আপনার সঙ্গে থাকুক! জয়গুরু!"

🎧 পডকাস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন ও সাবস্ক্রাইব করুন!

 

Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ(SriSriramthakur O gan Ganer vhovon Youtube channel) on March 05, 2025 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.