গুরু ভাই বোনসহ সকল সনাতনী ভাই বোনদের জানাই স্বাগত ,উদ্দেশ্য গুরু দেবের অমৃত বানী সকলের মাঝে প্রচার করা।

 

একদিন শ্রীশ্রীঠাকুর কয়েকজন ভক্তসহ প্রাতঃকালে নারায়ণগঞ্জ হইতে নৌকাযোগে বুড়িগঙ্গা পার হইয়া সরুখালের মধ্য দিয়া প্রায় চার পাঁচ মাইল দূরবর্তী একটি গ্রামে গিয়া উপস্থিত হইলেন।
গ্রামের ধারে নৌকা বাঁধিয়া সেই গ্রামের অনেক গৃহস্থবাড়ী ঘুরিয়া শ্রীশ্রীঠাকুর আশ্রিত অনাশ্রিত সকলকে দর্শন দিয়া চলিয়াছেন।
শেষে একটি গৃহস্থ গৃহে তাঁহারা প্রবেশ করিলেন।
সেই গৃহস্থের একটি পোষা কুকুর ছিল। বেশ বড়সড় কালো রঙের দেশীয় কুকুর।
ঠাকুর গৃহে প্রবেশ করিতেই সেই কুকুরটি লেজ নাড়িতে নাড়িতে ঠাকুরের পদযুগল প্রথমে শুঁকিয়া তাঁহার সন্মুখেই শুইয়া পড়িল।
ঠাকুর অল্পকাল স্থির হইয়া দাঁড়াইয়া পরে পাশ কাটাইয়া গৃহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করিলেন।
ঠাকুর পুনরায় পথ চলিতে শুরু করিলে দেখা গেল কুকুরটিও সঙ্গে চলিয়াছে। পিছু ছাড়ে নাই।
অনেকবেলায় নারায়ণগঞ্জ ফিরিবার জন্য ঘাটে আসিয়া তাঁহারা নৌকাতে উঠিলেন। নৌকা ছাড়ার পর লক্ষ্য করা গেল যে সেই কুকুরটি খালের জল সাঁতরাইয়া নৌকার পেছন পেছন আসিতেছে।
সবাই অবাক হইয়া গেলেন।
কিন্ত ঠাকুর এ বিষয়ে নির্লিপ্ত.... যেন তিনি লক্ষ্যই করেন নাই।
খালের পথ ছাড়িয়া নৌকা যখন নদীতে পড়িল কুকুরটিও নদীপথে পিছনে আসিতে লাগিল।
কুকুরটির কষ্ট দেখিয়া সকলে ঠাকুরের দৃষ্টি আকর্ষণ করিলে ঠাকুর নৌকা হইতে ছোট ঢিলের মত কিছু একটা কুড়াইয়া কুকুরটির দিকে ছুড়িয়া মারিলেন।
ছোট্ট সেই ঢিলটি কুকুরের কপালে গিয়া লাগিল। দেখা গেল কপালে লাগামাত্রই সে দিক পরিবর্তন করিয়া বিপরীত দিকে গিয়া ফিরিয়া গেল।
এই ঘটনার কয়েকমাস পর ঠাকুর আবার ঐ গ্রামে আসিয়া কয়েকটি বাড়ী ঘুরিয়া সেই গৃহস্থের বাড়ীতে আসিলেন যেখানে সেই কালো কুকুরটি তাঁহাদের পিছু লইয়া ছিল।
সেই গৃহে প্রবেশের পর একটি বালিকা ঠাকুরের সন্মুখে আসিয়া বলিল--"জানেন ঠাকুর মশাই, কুকুরটা আপনাগো পিছনে ত গেল দেখলাম।
কিন্তু ফিইরা আইস্যাই মইরা গেল।"
বালিকার বৃদ্ধা ঠাকুরমা বলিলেন- "সেদিন সন্ধ্যার সময় জলে কাদায় মাখামাখি অবস্থায় ফিরিল। তারপর তুলসী মঞ্চের নীচে কিছুক্ষণ গড়াগড়ি খাইয়া স্থির হইয়া গেল।"
এই ব্যাপারে সঙ্গের ভক্তরা ঠাকুরের নিকট জানিতে চাহিলে তিনি বলিলেন--
"ইনি আগের জন্মে একজন সাধু আছিলেন।
গুরু-প্রসাদ ঘৃণা কইরা খাইছিলেন বইল্যাই এই জন্মে কুকুর হইছেন।
কিন্তু পূর্বস্মৃতি পুরাপুরি ছিল। কুকুর জন্মের পর এইবার মুক্ত হইলেন।"
একজন ভক্ত বলিলেন--
"কিন্তু কোন কোন স্থানে প্রসাদ যেভাবে তৈয়ার করা হয় বা বিতরণ করা হয় তাহা দেখিয়া ঘৃণা বোধ হইতে থাকে।
অথচ প্রসাদ না নিলে প্রসাদকে অবমাননা করা হয়।
সেক্ষেত্রে কি করা উচিত।"
শ্রীশ্রীঠাকুর বলিলেন--
"প্রসাদ নিতে হয়। ঘৃণা হইলে গ্রহণ না কইরা পুকুরে বিসর্জন দিবেন।
পুকুর না পাইলে বড় গাছের তলায় রাইখ্যা দিতে পারেন।
বট-অশ্বত্থ বৃক্ষ হইলে ভাল হয়।
ধারে কাছে পুকুর বা বৃক্ষ না পাইলে যত্ন কইরা কাগজ বা পাতায় মুড়াইয়া রাইখ্যা পরে সুযোগমত পুকুর বা গাছ পাইলে সেই মত কাজ করিতে হয়।"
এই ঘটনাটি অনেক বড়ো দৃষ্টান্ত। চিন্তা করে দেখবেন গুরু প্রসাদ ঘৃণা করলে কি ফলাফল হতে পারে আর পরমগুরুর প্রতি যদি অবিশ্বাস জন্মায় তার ফল কত ভয়ানক হতে পারে।
গুরু কৃপাহি কেবলম্
গুরু চরন শরণম্
জয়রাম জয়গোবিন্দ
জয়রাম জয়গোবিন্দ

Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ(SriSriramthakur O gan Ganer vhovon Youtube channel) on March 30, 2025 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.