গুরু ভাই বোনসহ সকল সনাতনী ভাই বোনদের জানাই স্বাগত ,উদ্দেশ্য গুরু দেবের অমৃত বানী সকলের মাঝে প্রচার করা।

শ্রীশ্রী ফণীন্দ্রকুমার — পিতৃদেব কথোপকথন: ব্লগ পোস্ট


— শ্রীশ্রীঠাকুরের সহিত শ্রীঁফণীন্দ্রকুমার মালাকারের পিতৃদেবের কথোপকথন

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা (Explanation)

এই কথোপকথনটির মূল বক্তব্য: ভগবানের প্রতি নিঃস্বার্থ দান কেবল বাহ্যিক কর্ম নয়—যদি দানের সাথে আসক্তি থেকে মুক্তি না আসে, তবে সেই দান সত্যিকারভাবে মুক্তি দান করে না। দান-কার্যই জীবকে সাময়িক স্বর্গভোগ দিয়েতে পারে, কিন্তু যদি ব্যক্তি হৃদয়ে বস্তুগত/ইন্দ্রিয়াসক্তি রেখে দান করে, তাহলে সেই সঞ্চিত কামনা পুনরায় তাকে এই জগতেই ফিরিয়ে নিয়ে আসবে।

কথোপকথনের ধারায় বলা হয়েছে: যদি কর্মফল ভোগ না হয় (অর্থাৎ দান করলে সেই দান দ্বারা কেউ অহংকার, লাভলিপ্সা বা বস্তুপ্রেমে বাঁধা না পড়ে), তবে কর্মপাশও থাকবে না — অর্থাৎ কর্মের দ্বারা দৃষ্টিভঙ্গি বা আত্মিক শৃঙ্খলা বাঁধা পড়বে না। যখন কর্মপাশ মুক্তি ঘটে, তখন ব্যক্তি ব্রজ-বিদেহীর মতো অস্তিত্বগত স্বাধীনতা পায়—অর্থাৎ ইন্দ্রিয়, মন, বুদ্ধি আর অহংকার তাকে প্রলুব্ধ করতে পারবে না। এই অবস্থাই ধরা হয়েছে 'প্রেম যোগ'—একটি পরিশুদ্ধ অন্তরের প্রেম, যা গতাগতি (পুনর্জন্মের চক্র) কে অগ্রাহ্য করে।

মূল ধাপগুলি:

  1. নিরাশ্রয় দান: দান হোক নিঃস্বার্থ—লক্ষ্য হওয়া উচিত কেবল লাভ বা খ্যাতি নয়।
  2. আসক্তি লাঘব: দানের সময় নিজের মন থেকে ‘আমি’ ও ‘মে’র লাগাম কেমন ছেড়ে দেওয়া যাচ্ছে তা লক্ষ্য করুন।
  3. অন্তরশুদ্ধি ও প্রেম যোগ: দান-অনুশীলন যদি হৃদয়কে শুদ্ধ করে, তবে তা সরাসরি প্রেম-যোগ ও মুক্তির পথ করে।

উপসংহার: বহুবিধ বৃহৎ সামাজিক-উপকরণ (পুষ্করিণী, রাস্তা ইত্যাদি) করা অত্যন্ত মহৎ; কিন্তু প্রকৃত মুক্তি আসে তখনই যখন সেই কর্মগুলোতে ‘আসক্তি’ নাই — অর্থাৎ দান 'কর্মফলবাসনা'-র থেকে মুক্ত। তখনই দান-কার্য মানুষের জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য সম্পাদন করে: হৃদয়ে প্রেম-যোগ ও মুক্তি জাগায়।

দৈনন্দিন প্রয়োগ (Practical Steps)

  1. প্রতিদিন দান করার আগে ১ মিনিট নীরবতায় নিজেকে প্রশ্ন করুন: "এই কাজ কি শুধুই ভগবানের জন্য, নাকি খানিকটা গর্ব/দেখাবার মানসিকতা আছে?"
  2. যখনই দান করেন, তার নাম/উদ্দেশ্য গোপন রাখার অভ্যাস করুন—এতে অহংকার কিম্বা লোক-লাভের প্রবণতা কমে।
  3. প্রতি মাসে একবার নিজের প্রকৃত অনুপ্রেরণা পর্যবেক্ষণ করুন—যদি দেখা যায় যে দান আপনাকে অহংকারে শিকার করে, তাহলে আচরণ পরিবর্তন করুন।

FAQ

প্রশ্ন: দান করলে কি সবসময় পুনর্জন্মের চক্র থেকে মুক্তি মেলে?
উত্তর: না। দান-কার্য যদি নিঃশর্ত না হয়, অর্থাৎ এখনও কোনো ধরণের আসক্তি, আশা বা অহং আছে—তাহলে তা পুনরায় বেঁধে দিতে পারে। মুক্তি আসে তখনই যখন দান তার ভিতর থেকে আস্চর্যভাবে আসক্তিমুক্ত।

প্রশ্ন: সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ (রাস্তা, পুষ্করিণী) করাই যাবে?
উত্তর: অবশ্যই। সামাজিক কাজ করলে মানুষ সুফল পায়—কিন্তু সঠিক মানসিক চেতনা ও উদ্দেশ্য থাকা জরুরি, যাতে সেই কাজ আত্ম-প্রশিক্ষণ ও ভগবানপ্রেমের এক কেন্দ্র হয়।

শ্রীশ্রী ফণীন্দ্রকুমার — পিতৃদেব কথোপকথন: ব্লগ পোস্ট শ্রীশ্রী ফণীন্দ্রকুমার — পিতৃদেব কথোপকথন: ব্লগ পোস্ট Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ(SriSriramthakur O gan Ganer vhovon Youtube channel) on August 22, 2025 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.