শ্রীশ্রী রামঠাকুরের অভয়বাণী: মন্ত্রপ্রাপ্ত ভক্ত ব্রাহ্মণের চেয়েও উচ্চস্তরে 📖 উৎস: শ্রীগুরুরামকৃপাহি কেবলম, পৃষ্ঠা ৪৪ ✍️ লেখক: গুরুদয়াল বসুরায়চৌধুরী
শ্রীশ্রী রামঠাকুরের অভয়বাণী: মন্ত্রপ্রাপ্ত ভক্তের মর্যাদা ব্রাহ্মণের চেয়েও উচ্চ
✍️ লেখক: গুরুদয়াল বসুরায়চৌধুরী
📖 শ্রীগুরুরামকৃপাহি কেবলম, পৃষ্ঠা ৪৪
ভক্ত সমাগম ও দ্বিধা
এক শীতের দিনে শ্রীশ্রী রামঠাকুর আমাদের দেশের বাড়িতে এসেছিলেন। ধীরে ধীরে ভক্তদের সমাগম হতে লাগল। সেদিন সন্ধ্যায় নানা প্রসঙ্গে আড্ডা চলতে চলতে রাত অনেক হয়ে গেল। দূরের ভক্তদের বাড়ি ফেরা কঠিন হয়ে পড়ল।
তাদের মধ্যে কয়েকজন বিশিষ্ট ব্রাহ্মণ ভক্তও ছিলেন। ঠাকুরদাদা ও ঠাকুরমা শ্রীঠাকুরকে জিজ্ঞাসা করলেন — এঁদের জন্য আহার ও থাকার ব্যবস্থা কিভাবে করবেন? কারণ সে সময়ে জাত ও ধর্ম নিয়ে ছিল প্রবল গোঁড়ামি।
শ্রীঠাকুরের নির্দেশ
“ওনাদের আজ রাত্রে ভালভাবে আহারাদি ও থাকার ব্যবস্থা করার জন্য দীনেশকে বলেন।”
শ্রীঠাকুরের এই নির্দেশ শুনে পরিবারে সবাই ইতস্তত করতে লাগলেন। ব্রাহ্মণ ভক্তরাও দ্বিধায় পড়লেন— এদের বাড়ির অন্ন গ্রহণ করলে জাত নষ্ট হবে কি না? এ নিয়ে সবার মনে উৎকণ্ঠা।
ঠাকুরের অভয়বাণী
“যেদিন হইতে ওনাদের কানে মন্ত্র দেওয়া হইছে, সেদিন হইতে ওনারা ব্রাহ্মণের চেয়েও উচ্চস্তরে চইলা গেছেন। আপনারা ওনাদের অন্ন গ্রহণ করলে কারও জাত যাইবে না, কিম্বা কেহ সমাজচ্যুত হইবেন না। বিনা দ্বিধায় আজ আপনারা এখানে রাত্রের আহারাদি কইরা বিশ্রাম করেন। সকালে ঘুম থেইকা উইঠা যে যার মত বাড়ি চইলা যাইবেন।”
শ্রীঠাকুরের এই আশ্বাস শুনে ভক্তগণ জয়ধ্বনি দিলেন। সকলেই বিনা দ্বিধায় আহার গ্রহণ করে রাত্রে থেকে গেলেন। পরদিন সকালে আনন্দের সাথে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেলেন।
মূল শিক্ষা
- শ্রীশ্রী ঠাকুর মন্ত্রপ্রাপ্ত ভক্তদের মর্যাদা ব্রাহ্মণের চেয়েও উচ্চ বলেছিলেন।
- জাত-ধর্মের গোঁড়ামির ঊর্ধ্বে উঠে তিনি ভক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন।
- ভক্তকে গ্রহণ করলে কোনো সমাজচ্যুতি বা অপমান ঘটে না। বরং তা আধ্যাত্মিক উন্নতির পথ।
🌸 উপসংহার
শ্রীশ্রী রামঠাকুরের এই অভয়বাণী যুগযুগান্তরের জন্য এক মহান শিক্ষা। ভক্তির শক্তি জাতি, ধর্ম, সামাজিক ভেদাভেদ সবকিছুর ঊর্ধ্বে। ভগবানের কৃপা পেলে মানুষ প্রকৃত অর্থে উন্নত হয়, এবং তার মর্যাদা যে কোনো প্রথাগত সীমারেখার ঊর্ধ্বে উঠে যায়।

No comments: