🕉️ নাম করার রহস্য : শ্রীশ্রীঠাকুরের উপদেশ
ভূমিকা
মানব জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য আত্মোপলব্ধি। আর সেই পথের শ্রেষ্ঠ সহায় নামস্মরণ। তবে অনেকেই বলেন—“নাম করতে বসলে মন নানা দিকে ছুটে যায়, একাগ্র হয় না।” এই প্রশ্ন একদিন শিষ্যরা শ্রীশ্রীঠাকুরকে করেছিলেন। ঠাকুরের বাণী আজও আমাদের পথ প্রদর্শক।
শিষ্যের প্রশ্ন
“ঠাকুর, নাম করতে বসলে মন বিভিন্ন স্থানে ও বিষয়ের দিকে ঘুরে বেড়ায়। নাম হয় না। তবে কি নাম দিলেন?”
ঠাকুরের উত্তর
ঠাকুর মৃদু হেসে বলিলেন —
👉 “তোমার পূর্বজন্মের সাধিত নাম শুনাইছি, নাম দেই নাই। মাতৃজঠরেও নাম শুনাইছিলাম। প্রকৃতির রাজ্যে আইস্যা ভুইলা গেছ। পুনরায় নাম স্মরণ করাইয়া দিছি। নাম করে শিবরুপী প্রাণে। নাম আবরনহীন। তাই মনের সংকল্প বিকল্পের অপেক্ষা রাখে না, অবিরাম নাম হয়।”
নাম ও মন — ঠাকুরের শিক্ষা
-
মন চঞ্চল স্বভাবতই
মন সর্বদা চঞ্চল, কখনও স্থির থাকে না। নাম করার সময়ও সে নানা চিন্তা, ইচ্ছা ও কল্পনায় ঘুরে বেড়ায়। -
নামের দিকে লক্ষ্য রাখো
ঠাকুর বলিলেন—
“মন যেইখানে ইচ্ছা ঘুইরা বেড়াক। তুমি নাম শুনার জন্য চেষ্টা করবা। মনের দিকে লক্ষ্য রাখবা না। লক্ষ্য রাখবা নামের দিকে।” -
মন আবার ফিরবে নামের কাছে
যেমন নদীর জল ঘুরে ঘুরে সাগরে ফিরে আসে, তেমনি মন যতই ঘুরুক না কেন, একসময় আবার নামের দিকে ফিরে আসবে। -
অভ্যাসের পথই আসল পথ
ঠাকুর বলিলেন —
“তুমি সর্ব্বদা নাম শুনবার জন্য অভ্যাস কর।”
নাম শুনতে, নাম জপতে এবং নামের সুরে ভেসে থাকতে হবে। ধীরে ধীরে মন নিজে থেকেই নামের সঙ্গী হয়ে যাবে।
আধুনিক জীবনে প্রয়োগ
আজকের যুগে মানুষ চাপ, উদ্বেগ আর ব্যস্ততায় ভুগছে। মন স্থির থাকে না। এই অবস্থায় ঠাকুরের বাণী আমাদের দিশা দেখায়।
-
নামস্মরণ আমাদের মানসিক প্রশান্তি দেয়।
-
নাম আমাদের শিবরূপী প্রাণের সঙ্গে সংযোগ ঘটায়।
-
নামই হলো জীবনের চিরন্তন আশ্রয়।
উপসংহার
মন চঞ্চল হতেই পারে। কিন্তু নামের ধ্বনি, নামের অনুরণন—এই আমাদের আসল আশ্রয়। নাম করতে করতে মনকে টেনে আনার দরকার নেই। শুধু নাম শুনতে থাকলেই মন একসময় নিজে থেকে নামের পথে ফিরে আসবে।
🌸 জয় রাম। জয় গোবিন্দ। 🌸

No comments: