প্রতিদিন নামের অনুশীলন — ধৈর্য্য, অভ্যাস ও ভগবানের ডাক
প্রতিদিন সুবিধামত কিছু সময় ঠিক কইরা—যখন কাজকর্ম থাকে না—তখন বসে নাম করবেন। কিন্তু এর মানে এই না যে যতটুকু সময় বসে থাকলেন ততটুকু নাম হইল; নাম সর্ব্বদা জপ করা উচিত—যেমন প্রাণ সারাক্ষণ আমাদের সাথে থাকে, তেমনি নামও।
“তাই সেই অবস্থাটা আসে অভ্যাস করতে করতে। তাড়াতাড়ি কইর্যা কিছু হয় না… তাড়াতাড়ি করলে আপনি পাকা ফল খাইতে চাইলেন, ফলটা কাঁচা থাকলে তাতে নুন বা চিনি মাখাইয়া খাইতে হয়—তাতে পাকার স্বাদ পাওয়া যায় না।”
ঠাকুরের মূল শিক্ষা
- নিয়মিত সময় ঠিক করা: প্রতিদিন সুবিধাজনক সময়ে নামের জন্য কিছু সময় নির্দিষ্ট করুন।
- নাম সারাক্ষণ: বসে থাকা সময় ছাড়া নামের অনুরণন সর্বদাই বজায় রাখুন—প্রাণের মতো তা স্বাভাবিক হওয়া উচিত।
- ধৈর্য্য অপরিহার্য: দ্রুত ফল প্রত্যাশা করবেন না; ধৈর্য্য ও নিয়মিত অনুশীলনে নামের মাধুর্য আসে।
কীভাবে শুরু করবেন (প্রাথমিক নির্দেশ)
- প্রতিদিন সকাল বা সন্ধ্যায় ৫–১০ মিনিট দিয়ে শুরু করুন।
- শ্বাস-প্রশ্বাস সাথে নাম শ্রবণ করুন—শব্দটি “শুনুন” বলার অভ্যাস গড়ুন।
- মন হারালে বিরক্ত হবেন না; ধীরে ধীরে নামের প্রতি মন আকৃষ্ট হবে।
- চেষ্টা করবেন না দ্রুত ফল পেতে—ফলের মত পাকা হওয়ার জন্য সময় লাগে।
ভগবানের ডাক — নাম ধ্বনি বললে তিনি আসেন
ভগবানকে ডাকবার সঙ্গে সঙ্গে তিনি জাগেন—নামে ডাকার উদাহরণ হিসেবে ঠাকুর অনেক গ্রন্থ থেকে গল্প উল্লেখ করেন: সীতা যখন অশোক বনে ডাকছিলেন, দ্রৌপদী যখন দুই হাত তুলি করে ডাকছিলেন, দেবকী যখন কারাগারে ডাকছিলেন—প্রভুর উপস্থিতি। যদি তুমি এমনভাবে ডাকতে পারো, তিনি আসেন এবং দেখা দেন।
উপসংহার
নামের অনুশীলন এক প্রক্রিয়া—অভ্যাস, ধৈর্য্য এবং শ্রবণ—এই তিনটি মিলে মন ধীরে ধীরে নামের প্রতি স্থির হবে। তাড়াহুড়া করে ফল চাওয়ার বদলে ধীরে ধীরে পথচলা করো; তাহলেই নামের মাধুর্য স্বাদ পাওয়া যাবে।
তথ্যসূত্র: নাম সম্বন্ধে — শ্রীমৎ ভবতোষ বন্দ্যোপাধ্যায় (৪র্থ মোহন্ত মহারাজ)

No comments: