নামস্মরণের মূল উদ্দেশ্য কেবল মুখে উচ্চারণ নয়; এটি নিজের অন্তরের কেন্দ্রে সচেতন অবস্থায় থাকা। যিনি প্রাণের সঙ্গে যুক্ত, তিনিই নামের স্বর শুনতে পান, কারণ তিনি অন্তরাত্মার সঙ্গে একাত্ম।
প্রাণ ও 'নাম' — শ্রীশ্রীঠাকুরের তত্ত্ব
মূল বাণী
নাম প্রাণে করে। ঘুমাইলে জীবের নাম হয়, সেই নাম জাগরণে বিলুপ্ত হইয়া বহু অংশে নানান আখ্যা ধারণ করিয়া নানান রূপ রসে আকৃষ্ট থাকায় নাম যে সর্ব্বদা হয় তাহা জানিতে না পারিয়া প্রকৃতির গুণের দ্বারায় মন-বুদ্ধির বৈগুণ্যতা দ্বারা নানান বাসনা করিয়া বন্দী হইয়া পড়ে। তাতেই নানান উপাধি-মণ্ডিত হইয়া ভাগ্যবশে সুখদুঃখ জন্মমৃত্যু এড়াইতে পারে না। অতএব ধৈর্য্য ধরিয়া প্রাণের নিকট থাকিবেন, তবেই নাম শুনিতে পারিবেন।
— বেদবাণী, দ্বিতীয় খণ্ড, ১৭ নং পত্রাংশ
ব্যাখ্যা
ঠাকুর এখানে ‘নাম’কে কেবল শব্দগুচ্ছ নয়, বরং প্রাণের অন্তঃস্থ স্পন্দন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ঘুমন্ত অবস্থায় মন ও বুদ্ধির ক্রিয়া নীরব থাকলেও, নাম অব্যাহত থাকে—কারণ নামই প্রাণের পলস। কিন্তু জাগরণে মন নানা রূপ, ভাব ও ইন্দ্রিয়রসে আকৃষ্ট হয়ে সেই চিরন্তন নামশব্দের অনুভব হারিয়ে ফেলে।
ফলতঃ, প্রকৃতির গুণে বিভ্রান্ত মন-বুদ্ধি জীবকে অন্তহীন বাসনা, সুখ-দুঃখ, জন্ম-মৃত্যুর চক্রে ফাঁসিয়ে রাখে। তাই ঠাকুরের উপদেশ—ধৈর্য্য ধরে প্রাণের নিকটে থাকুন। যখন মন স্থির হয়, অন্তরের প্রতি কান পাতলে নিজেই ‘নাম’-এর ধ্বনি শুনতে পাবেন। সেটিই জীবের প্রকৃত জাগরণ।
আধ্যাত্মিক তাৎপর্য
নামস্মরণের মূল উদ্দেশ্য কেবল মুখে উচ্চারণ নয়; এটি নিজের অন্তরের কেন্দ্রে সচেতন অবস্থায় থাকা। যিনি প্রাণের সঙ্গে যুক্ত, তিনিই নামের স্বর শুনতে পান, কারণ তিনি অন্তরাত্মার সঙ্গে একাত্ম।
জয়রাম জয়গোবিন্দ
গুরু কৃপাহি কেবলম্
#BedBani #SriSriRamThakur #Namtattva #Bhakti #PranShakti #GuruKripa #SpiritualBengal

No comments: