সত্য ও ধর্ম (সত্যব্রতই প্রকৃত ধর্ম),কৃষ্ণভক্তি, মায়া, মুক্তির পথ
,গুরু-আজ্ঞা অনুসরণ, দায়-ধর্ম


#জয়গুরুজয়রাম এই অংশটি বেদবাণী থেকে নেওয়া, যেখানে ব্রহ্মচর্য্য এর প্রকৃত অর্থ ও তার আধ্যাত্মিক অনুশীলনের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এখানে ব্রহ্মচর্য্য বলতে কেবল দেহসংযম নয়, বরং মন, বুদ্ধি ও চিত্তকে ব্রহ্ম বা ঈশ্বরে স্থির রাখার অনুশীলন বোঝানো হয়েছে।
মূল ব্যাখ্যা
-
ব্রহ্মচর্য্য এর অর্থ
শব্দটি আক্ষরিকভাবে মানে “ব্রহ্মে বিচরণ করা” — অর্থাৎ মন-প্রাণকে ঈশ্বরস্বরূপ সত্যে স্থিত রাখা। যেমন আকাশ স্থির, তেমনই মনকেও স্থির, অচঞ্চল এবং প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। আকাশ যেমন আগুনে দগ্ধ হয় না বা অস্ত্রে বিভক্ত হয় না, তেমনই সত্যে স্থির মনও বাহ্যিক প্রভাবে বিচলিত হয় না। -
অনুশীলনের নির্দেশ
চিত্তকে এমন অচঞ্চল ও স্থির রাখার জন্য অবিরাম চেষ্টা করাই সত্য ব্রহ্মচর্য্য। এই সাধনার মূল হলো ভগবানের ইচ্ছার প্রতি সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ। মানুষ নিজের কর্তৃত্বে কিছু করতে পারে না—যাহা ভগবান করান, তাহাই ঘটে। -
গুরু আজ্ঞার পালন
গুরু বা আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শকের নির্দেশকে সর্বদা অনুসরণ করাই সর্বোচ্চ সাধনা। এতে কর্মে আসক্তি নয়, বরং শ্রদ্ধাভাজন অনুরাগ তৈরি হয়, যা পতন বা ভ্রষ্টতা থেকে রক্ষা করে। -
গৃহস্থে থেকেও সাধনা
, সংসার ত্যাগ না করেও সত্য সাধনা সম্ভব। কিন্তু তার শর্ত হলো— সর্বদা ভগবানের উপর নির্ভর করে, অনাসক্তভাবে সংসারের কর্তব্য পালন করা।
অর্থাৎ, সংসারে থেকেও মন যেন ঈশ্বরনির্ভর ও স্থির থাকে।
সারসংক্ষেপ
ব্রহ্মচর্য্য মানে বাহ্যিক সংযম নয়, বরং ঈশ্বরে স্থির মনোযোগ ও ঈশ্বরনির্ভর জীবনযাপন। নিজের প্রচেষ্টা নয়, গুরু-নির্দেশিত অনাসক্ত কর্মই সত্য সাধকের পথ।
সংসার ও সাধনা একে অপরের পরিপন্থী নয়—যদি মন স্থির থাকে ব্রহ্মে, তাহলে সংসারেও ঈশ্বর-সাধনা সম্ভব।

No comments: