মন ও ভগবৎসেবা — বেদবাণী ব্যাখ্যা
বেদবাণী দ্বিতীয় খণ্ড / ১০৯
মন যখন যাহা অবলম্বন করে তাহাই অনুভূতি হয়। মন হইতে কেবল মাত্র সুখ আর দুঃখই প্রাপ্ত হয়, কর্ম্মের দ্বারা স্বর্গ আর নরকই স্থান পায়। ভগবানের সেবাই পরম পুরুষার্থ, দ্বৈত বুদ্ধি হইতে উদ্ধার করেন।
সহিষ্ণুতা বস্তুর আশ্রয় নিয়া যথাসাধ্য তাহার অধীন হইতে চেষ্টা করাই সাধন ভজন।
ইন্দ্রিয় অতীন্দ্রিয় হইতে বিভাগ থাকাই সুখ।
গুরুর আজ্ঞা ধরিয়া থাকাই ধর্ম্ম, ইহাই নিস্কাম যজ্ঞ, ইহাই হরিনাম এবং ভগবৎ সেবা।
এই সেবা নিত্য বলিয়াই ‘উদ্ধার’ শব্দে প্রতিপাদ্য হয়।
স্বর্গ আর মুক্তি উভয়ই নরক, কারণ স্বর্গ সুখভোগ, অবসানে পুনরাবর্ত্তে সেই সুখ বঞ্চিত হইয়া দুঃখী হয়। নরকের দুঃখই তাহার স্বভাব, তাহারও ভোগ অন্তে দুঃখময় সংসারে পড়িতে হয়।
অতএব দিবানিশি উপস্থিত প্রয়োজনীয় কর্ম্মের জন্য যত্ন করিয়া সাধ্যমত গুরুর বাক্য স্মরণের চেষ্টা করাই উচিত।
সহিষ্ণুতা বস্তুর আশ্রয় নিয়া যথাসাধ্য তাহার অধীন হইতে চেষ্টা করাই সাধন ভজন।
ইন্দ্রিয় অতীন্দ্রিয় হইতে বিভাগ থাকাই সুখ।
গুরুর আজ্ঞা ধরিয়া থাকাই ধর্ম্ম, ইহাই নিস্কাম যজ্ঞ, ইহাই হরিনাম এবং ভগবৎ সেবা।
এই সেবা নিত্য বলিয়াই ‘উদ্ধার’ শব্দে প্রতিপাদ্য হয়।
স্বর্গ আর মুক্তি উভয়ই নরক, কারণ স্বর্গ সুখভোগ, অবসানে পুনরাবর্ত্তে সেই সুখ বঞ্চিত হইয়া দুঃখী হয়। নরকের দুঃখই তাহার স্বভাব, তাহারও ভোগ অন্তে দুঃখময় সংসারে পড়িতে হয়।
অতএব দিবানিশি উপস্থিত প্রয়োজনীয় কর্ম্মের জন্য যত্ন করিয়া সাধ্যমত গুরুর বাক্য স্মরণের চেষ্টা করাই উচিত।
🕉️ ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ
১. মনই সুখ-দুঃখের উৎস:
যে বিষয়ে মন অবলম্বন করে, সেই বিষয়েই আনন্দ বা কষ্ট অনুভূত হয়। অর্থাৎ, মন যদি ভগবানের চরণে নিবিষ্ট থাকে, তবে সব অবস্থাতেই শান্তি থাকে। কিন্তু ইন্দ্রিয়বৃত্তিতে মন নিবদ্ধ থাকলে দুঃখ আসে।
যে বিষয়ে মন অবলম্বন করে, সেই বিষয়েই আনন্দ বা কষ্ট অনুভূত হয়। অর্থাৎ, মন যদি ভগবানের চরণে নিবিষ্ট থাকে, তবে সব অবস্থাতেই শান্তি থাকে। কিন্তু ইন্দ্রিয়বৃত্তিতে মন নিবদ্ধ থাকলে দুঃখ আসে।
২. কর্মফল — স্বর্গ ও নরক:
মানবজীবনের কর্মই নির্ধারণ করে কোথায় যাওয়া হবে। সৎ কর্মে স্বর্গ, অসৎ কর্মে নরক। কিন্তু উভয়ই অস্থায়ী; সত্য মুক্তি কেবল ভগবদ্ভক্তিতেই।
মানবজীবনের কর্মই নির্ধারণ করে কোথায় যাওয়া হবে। সৎ কর্মে স্বর্গ, অসৎ কর্মে নরক। কিন্তু উভয়ই অস্থায়ী; সত্য মুক্তি কেবল ভগবদ্ভক্তিতেই।
৩. ভগবানের সেবা — পরম পুরুষার্থ:
ভগবানের সেবাই জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য (পরম পুরুষার্থ)। এই সেবার মাধ্যমে মানুষ দ্বৈত বুদ্ধি অর্থাৎ “আমি” ও “তুমি”-র বিভাজন থেকে মুক্ত হয়।
ভগবানের সেবাই জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য (পরম পুরুষার্থ)। এই সেবার মাধ্যমে মানুষ দ্বৈত বুদ্ধি অর্থাৎ “আমি” ও “তুমি”-র বিভাজন থেকে মুক্ত হয়।
৪. সহিষ্ণুতা ও আত্মসংযমই সাধন:
সাধনা মানে কেবল জপ বা ধ্যান নয়; সহিষ্ণুতা নিয়ে নিজের সীমার মধ্যে থেকে সকল কষ্টের মধ্যেও গুরুর আশ্রয়ে থাকা — এটাই প্রকৃত ভজন।
সাধনা মানে কেবল জপ বা ধ্যান নয়; সহিষ্ণুতা নিয়ে নিজের সীমার মধ্যে থেকে সকল কষ্টের মধ্যেও গুরুর আশ্রয়ে থাকা — এটাই প্রকৃত ভজন।
৫. ইন্দ্রিয় থেকে অতীন্দ্রিয় — সুখের উৎস:
যখন ইন্দ্রিয়সুখ থেকে মন মুক্ত হয়ে অতীন্দ্রিয় আনন্দে, অর্থাৎ ঈশ্বরানন্দে প্রবিষ্ট হয় — তখনই প্রকৃত সুখ লাভ হয়।
যখন ইন্দ্রিয়সুখ থেকে মন মুক্ত হয়ে অতীন্দ্রিয় আনন্দে, অর্থাৎ ঈশ্বরানন্দে প্রবিষ্ট হয় — তখনই প্রকৃত সুখ লাভ হয়।
৬. গুরুর আজ্ঞাই ধর্ম:
গুরুর বাক্য মেনে চলাই প্রকৃত ধর্ম। এই কর্মই নিস্কাম যজ্ঞ, এই জপই হরিনাম, এই আচরণই ভগবৎসেবা।
গুরুর বাক্য মেনে চলাই প্রকৃত ধর্ম। এই কর্মই নিস্কাম যজ্ঞ, এই জপই হরিনাম, এই আচরণই ভগবৎসেবা।
৭. ‘উদ্ধার’ শব্দের তাৎপর্য:
এই সেবা নিত্য ও চিরস্থায়ী বলেই ‘উদ্ধার’ শব্দে বলা হয়েছে। কারণ এটি সংসারের বন্ধন থেকে আত্মাকে মুক্ত করে।
এই সেবা নিত্য ও চিরস্থায়ী বলেই ‘উদ্ধার’ শব্দে বলা হয়েছে। কারণ এটি সংসারের বন্ধন থেকে আত্মাকে মুক্ত করে।
৮. স্বর্গ ও মুক্তিও নরকসম:
স্বর্গে সুখভোগ আছে, কিন্তু তা শেষ হয় — পরে দুঃখ আসে। মুক্তিও যদি নিস্ক্রিয় অবস্থা হয়, তবে তা চিরস্থায়ী আনন্দ নয়। তাই ভগবৎসেবাই প্রকৃত মুক্তি।
স্বর্গে সুখভোগ আছে, কিন্তু তা শেষ হয় — পরে দুঃখ আসে। মুক্তিও যদি নিস্ক্রিয় অবস্থা হয়, তবে তা চিরস্থায়ী আনন্দ নয়। তাই ভগবৎসেবাই প্রকৃত মুক্তি।
৯. গুরুর বাক্য স্মরণই সর্বোচ্চ সাধনা:
জীবনের প্রতিদিন, প্রতিক্ষণে গুরুর বাক্যকে স্মরণ ও পালন করাই মুক্তির পথ। দৈনন্দিন কর্মে গুরুর আদর্শকে প্রয়োগ করাই ভক্তির প্রকৃত রূপ।
জীবনের প্রতিদিন, প্রতিক্ষণে গুরুর বাক্যকে স্মরণ ও পালন করাই মুক্তির পথ। দৈনন্দিন কর্মে গুরুর আদর্শকে প্রয়োগ করাই ভক্তির প্রকৃত রূপ।
🌺 উপসংহার
মানুষের মনই তার স্বর্গ ও নরক নির্ধারণ করে। ভগবানের সেবা, গুরুর আজ্ঞা ও সহিষ্ণু জীবনের মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত আনন্দ ও উদ্ধার। এই শিক্ষাই শ্রীশ্রী রামঠাকুরের বাণীর মর্ম — “গুরু কৃপাহি কেবলম্” — অর্থাৎ গুরুকৃপাই সর্বস্ব।
মন ও ভগবৎসেবা — বেদবাণী ব্যাখ্যা
Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ(SriSriramthakur O gan Ganer vhovon Youtube channel)
on
October 16, 2025
Rating:

No comments: