বৈষ্ণবের কয়টি লক্ষন ও কি কি???
বৈষ্ণবের লক্ষণ মোট ২৬টি। এই লক্ষণগুলো "চৈতন্য চরিতামৃত" গ্রন্থে (মধ্যলীলায় – ২২.৭৮–৮০) উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলি একজন খাঁটি বৈষ্ণবের চরিত্র ও আচরণের মৌলিক বৈশিষ্ট্য বোঝায়।
নীচে বৈষ্ণবের ২৬টি লক্ষণ এবং প্রতিটির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:
বৈষ্ণবের ২৬টি লক্ষণ ও ব্যাখ্যা:
1. কৃপালু (করুণাময়)
— সকল প্রাণীর প্রতি দয়া দেখান, কাউকে কষ্ট দিতে চান না।
2. অকৃতদ্রোহী (অহিংসক)
— কারও প্রতি বিদ্বেষ বা শত্রুতা রাখেন না।
3. সত্যবাদী
— সর্বদা সত্য কথা বলেন, মিথ্যা বলেন না।
4. সম
— সকলের প্রতি সমভাব পোষণ করেন; বন্ধু-শত্রু ভেদ করেন না।
5. নিদ্রালু (ক্ষমাশীল)
— দোষ ক্ষমা করতে জানেন; প্রতিশোধপরায়ণ নন।
6. অকারি (অপরকে দুঃখ দেন না)
— কারও ক্ষতি করেন না, কটু কথা বলেন না।
7. শান্ত
— মৃদুভাষী, শান্ত স্বভাবের, অশান্ত বা উগ্র নন।
8. মার্দব (নম্র)
— অত্যন্ত বিনয়ী ও নম্র আচরণ করেন।
9. মৌন (সংযমী বাক্যব্যবহার)
— অপ্রয়োজনীয় কথা বলেন না, বাকসংযম পালন করেন।
10. অপ্রমত্ত (সতর্কচেতন)
— আত্মজ্ঞান ও কর্মে সর্বদা সজাগ ও সচেতন।
11. অস্পৃহ (নির্লোভ)
— ধন-সম্পত্তি বা ইন্দ্রিয়ভোগে আসক্ত নন।
12. মৃদু (নরম স্বভাবের)
— আচরণে কঠোরতা নেই, কোমল ও মধুর।
13. শুচি (শুচিবাচার)
— বাইরের ও ভেতরের উভয় দিকেই পরিচ্ছন্ন।
14. অসাহঙ্কারী
— অহংকার করেন না, নিজেকে বড় ভাবেন না।
15. স্থিতধী (দৃঢ় বুদ্ধি)
— জ্ঞানে ও বিশ্বাসে অটল ও স্থির।
16. অসহায় হিতৈষী
— গরীব ও দীনহীনদের উপকারে সদা আগ্রহী।
17. সার্বভৌমিক (সবার উপকারী)
— জাতি-ধর্ম-ভেদাভেদ না করে সবার মঙ্গল চান।
18. কৃষ্ণএকশরণ (শুধু কৃষ্ণনিষ্ট)
— একমাত্র কৃষ্ণকে উদ্দেশ্য করে সব কিছু করেন।
19. অকাম (কামনাহীন)
— নিজের কোন ইচ্ছা বা স্বার্থ নেই, ঈশ্বরভক্তিতেই তৃপ্ত।
20. অনিন্দক (অন্যের নিন্দা করেন না)
— কারো সমালোচনা বা নিন্দা করেন না।
21. মনহী (মননিয়ন্ত্রক)
— নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখেন।
22. শুভকৃত (সত্কর্মপরায়ণ)
— সর্বদা পুণ্য ও কল্যাণমূলক কাজ করেন।
23. শ্রবণপ্রিয় (হরিকথা শ্রবণ ভালোবাসেন)
— কৃষ্ণলীলা ও নাম শ্রবণে আগ্রহী।
24. কীর্তনপ্রিয়
— কৃষ্ণনামের কীর্তন করতে ভালোবাসেন।
25. মহাবাগ্যবান (ভাগ্যবান)
— এমন গুণধর্মী হওয়াটা বিরল সৌভাগ্যের ব্যাপার।
26. কৃষ্ণপ্রেমী
— সর্বোচ্চ লক্ষণ—তিনি কৃষ্ণপ্রেমে পূর্ণ, কৃবৈষ্ণব দর্শনে, একজন শুদ্ধ বৈষ্ণবের ছাব্বিশটি (২৬) গুণ বা লক্ষণ বর্ণিত আছে। এই গুণাবলী একজন ভক্তের আদর্শ চরিত্র ও আচরণকে নির্দেশ করে।
বৈষ্ণবের সেই ছাব্বিশটি লক্ষণ নিচে দেওয়া হলো:
১. কৃপালু (দয়ালু)
২. অকৃতদ্রোহ (কারো প্রতি বিদ্বেষ বা শত্রুতা না রাখা)
৩. সত্যসার (সত্যবাদী ও সত্যকে অবলম্বন করে থাকা)
৪. সম (সকলের প্রতি সমভাবাপন্ন)
৫. নির্দোষ (কারো দোষ না দেখা বা দোষারোপ না করা)
৬. বদান্য (উদার)
৭. মৃদু (কোমল স্বভাবের)
৮. শুচি (বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণভাবে পবিত্র)
৯. অকিঞ্চন (ধন-সম্পদের প্রতি অনাসক্ত)
১০. সর্বোপকারক (সকলের উপকার করতে ইচ্ছুক)
১১. শান্ত (প্রশান্ত ও স্থির চিত্তের)
১২. কৃষ্ণৈকশরণ (কেবল কৃষ্ণের শরণাপন্ন)
১৩. অকাম (বাসনা বা কামনা রহিত)
১৪. নিরীহ (নিরভিমান বা বিনয়ী)
১৫. স্থির (সিদ্ধান্তে অটল বা দৃঢ়)
১৬. বিজিত-ষড়গুণ (ছয়টি রিপু—কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ, মাৎসর্যকে জয় করেছেন)
১৭. মিতভুক (পরিমিত আহারকারী)
১৮. অপ্রমত্ত (অসতর্ক নন, সচেতন)
১৯. মানদ (অন্যকে সম্মান দেন)
২০. অমানী (নিজের জন্য সম্মান চান না)
২১. গম্ভীর (গভীর স্বভাবের)
২২. করুণ (দয়ালু ও সহানুভূতিশীল)
২৩. মৈত্র (সকলের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ)
২৪. কবি (শাস্ত্রজ্ঞান সম্পন্ন ও চিন্তাশীল)
২৫. দক্ষ (নিপুণ ও কর্মঠ)
২৬. মৌনী (অপ্রয়োজনীয় কথা থেকে বিরত, কেবল কৃষ্ণকথা বলেন)
এই গুণগুলি কোনো বৈষ্ণবকে কেবল বাহ্যিক আচার-আচরণের দ্বারা নয়, বরং তার চরিত্রের মাধুর্য এবং আত্মিক উন্নতির মাধ্যমে চিহ্নিত করে।
বৈষ্ণবের কয়টি লক্ষন ও কি কি???
Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ(SriSriramthakur O gan Ganer vhovon Youtube channel)
on
October 06, 2025
Rating:

No comments: