শ্রীশ্রী ঠাকুরের অলৌকিক প্রকাশ: “আমার মধ্যে সবই আছে”— রোহিণীকুমার মজুমদার মশাইয়ের অভিজ্ঞতা
ভূমিকা
রোহিণীকুমার মজুমদার মশাইয়ের জীবনে এক মহাজাগতিক মুহূর্ত চিরস্মরণীয় হয়ে আছে, যখন শ্রীশ্রী ঠাকুর স্বয়ং তাঁর কাছে পূর্ণব্রত নারায়ণরূপে প্রকাশিত হয়েছিলেন। এই ঘটনা কেবল ভক্তহৃদয়ে গভীর বিশ্বাস জাগায় না, বরং ঠাকুরের সর্বব্যাপী রূপের সত্যতাও প্রমাণ করে।
মূল ঘটনা
রোহিণীকুমার মজুমদার মশাই শ্রীশ্রীঠাকুরের পট উত্তরমুখী হয়ে পূজা শেষে পশ্চিমমুখী হয়ে কালীস্তোত্র পাঠ করতেন। সেই অভ্যাসের মধ্যে তাঁর মনে ধারণা ছিল দক্ষিণাকালী ও ঠাকুর এক নন। তিনি বলেন—
“আমি শয়ন করিয়া আছি, হঠাৎ দেখি ঠাকুর উঠিয়া বসিয়া আমাকে বলিতেছেন— ‘আমার মধ্যে সব আছে, বিশ্বাস হয় না?’ তারপর বলিলেন, ‘তবে এই দেখেন’, এই বলে তিনি দুই হাত দুই দিকে প্রসারিত করিলেন। সঙ্গে সঙ্গে দুদিক হইতে হস্ত বাহির হইতে আরম্ভ করিল। আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বলিলাম, ‘না, না, আর না।’ বলিয়া দুই হাত জোড় করিয়া প্রণাম করিলাম। ঠাকুর তখন হাসিতে হাসিতে বলিলেন— ‘এইবার বিশ্বাস হইয়াছে যে আমার মধ্যে সবই আছে। সবই এক, ঐ ফটোতে প্রকট হয়।’ সেই দিন হতে আমার সংশয় ঘুচিয়া গেল। বুঝিলাম আমার পরমারাধ্য ঠাকুর স্বয়ং পূর্ণব্রত নারায়ণ।”
ব্যাখ্যা (Subrata Majumder)
এই অভিজ্ঞতার তাৎপর্য গভীর। রোহিণীবাবুর মনে যে দ্বৈতবোধ ছিল— ঠাকুর ও দক্ষিণাকালী আলাদা— তা নিজের চোখে অলৌকিক দৃশ্য দেখে মিটে যায়। শ্রীশ্রী ঠাকুর তাঁকে দেখিয়ে দিলেন যে তাঁর মধ্যে সমস্ত শক্তি, সমস্ত দেবরূপ আছে। পূর্ণব্রত নারায়ণ অর্থাৎ সর্বগুণসম্পন্ন ও সর্বব্যাপী সত্য— যে একজন সত্যগুরু ও ঈশ্বররূপে নিজের ভক্তের সংশয় দূর করে দেন। এই ঘটনা ভক্তির মর্ম, জীবনের ব্রত এবং শ্রীশ্রী ঠাকুরের সর্বাঙ্গীন রূপ বোঝার জন্য অপরিহার্য।

No comments: