শ্রীশ্রী কৈবল্যধামের মোহান্ত মহারাজ শ্যামদাদা — আত্মকথা ও শেষ বিদায়
দেহরক্ষার অল্প আগে শ্যামদাদা যখন পীড়িত হইয়া একপ্রকার শয্যাশায়ী, তখন তাঁহার চিকিৎসকদিগকে বলিতেন, "সংসারে চিকিৎসকের প্রয়োজন হয়, কিন্তু আমার বেলায় চিকিৎসক কি করিবেন। আমার চিকিৎসক আমার এই গুরুদেব, তাঁহার ডাক আসিলে এই সব ঔষধে কিছুই হইবে না। সকলের মনের শান্তির জন্য ঔষধ খাইতেই হইবে। তাহাও আমার অনিচ্ছায়।"
আশ্রমের সেবকবৃন্দ কি অনুগত ভক্তবৃন্দ দেখিতে গেলে শ্যামদাদা তাঁহাদিগকে বলিতেন, "যান যান বাড়ী চলে যান যার যার কাজ করেন, দেখাশুনা বহুই হইল, আমি কুইড়া ও আলসিয়া লোক দেখিতে পারি না। গায়ে খেটে কাজ কর, পেটে খাও, মুখে হরি বল, সত্যই হইল চলন যাত্রীর সম্বল। হায় হায় কেন আইলাম! কি করিলাম! কি নিলাম! দিন ত যায়! এবার ত এখানে, আবার কোন খানে। কি যে ছিলাম! এত দিনে রাস্তায় ভিখারীর মত পচিয়া গলিয়া পড়িতাম। শ্রীশ্রীঠাকুর আমাকে রাস্তা হইতে কুঁড়াইয়া আনিয়া সিংহাসনে বসাইলেন। কতলোক আমাকে দেখে, পুছে, তাঁহার চরণ তলে না থাকিলে কেহই কানাকড়ি দিয়া পুছিতনা।"
"শ্রীগুরু চরণে কি জলন্ত বিশ্বাস। নিজের জীবনটাকে শ্যামদাদা আগাগোড়া তন্ন তন্ন করিয়া খুঁজিয়া দেখিলেন, পূর্ব্ব-জন্মার্জিত সুকৃতির ফলে যদি তাঁহার এই অযাচিত গুরুকৃপা লাভ না হইত, তবে তিনি পথের কাঙ্গাল হ'য়ে ধূলায় গড়াগড়ি যাইতেন, কেহই তাঁহাকে পুছিত না। মনের আবর্জ্জনা অনুতাপানলেই দগ্ধ হয়।"
আজ ১৩৬৬ সনের ১৮ই ফাল্গুন শুক্লা-পঞ্চমী তিথি উত্তরায়ণ—পথে কুড়ান শ্যাম—আজ শ্রীশ্রীকৈবল্যধামের মোহান্ত মহারাজ শ্যামদাদা —শ্রীশ্রীঠাকুরের অপরিসীম কৃপার পাথেয় লইয়া এ মরজগত হইতে মহাপ্রস্থান করিলেন।
পাছে পড়িয়া রহিল প্রভূত অনিত্য সম্পদ—ধন দৌলত আর অগণিত গুণগ্রাহী নিজ জনগণের হৃদয় রাজ্য ও তাঁহাদের মর্ম্মভেদী হাহাকার, করুন ক্রন্দন।
সংক্ষিপ্ত টীকা (উল্লেখ্য)
শ্যামদাদার জীবন আমাদের শেখায়: গুরু-ভক্তি ও অনুতাপের শক্তি জীবনকে বদলে দিতে পারে। শ্রীশ্রীঠাকুরের করুণা তাঁর জীবনে আশীর্বাদে পরিণত হয়—যা বঞ্চিত জীবকেও আত্মমর্যাদা দান করে।
উৎস
শ্রীমৎ শ্যামদাদার আত্মকথা — শ্রীমহেন্দ্র চন্দ্র চক্রবর্তী
Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ(SriSriramthakur O gan Ganer vhovon Youtube channel)
on
September 04, 2025
Rating:






.jpg)
No comments: