কৈবল্যশক্তি — কৈবল্যধাম আশ্রমের বিরাট বটবৃক্ষ
কৈবল্যধাম আশ্রমের পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই বিরাট বটবৃক্ষ, শ্রী শ্রী ঠাকুর যার নামকরণ করেছেন “কৈবল্যশক্তি”। কৈবল্যশক্তির মাহাত্ম্য সম্পর্কে শ্রীমুখে ঠাকুর যাহা বলিয়াছেন তাহা নিম্নে বর্ণিত হইল —
“. . . . . . . . . . . . কৈবল্যনাথ বলিতে গেলে কৈবল্য শক্তিকেও বলিতে হইবে। ইহাতে যে কোন দেবতারই অর্চ্চনা হউক না। সেই সেই দেবতার ঐ কৈবল্যনাথেরই হইবে। যে চিত্রপট আছে সেখানে মঙ্গলঘট বসাইয়া তাহারই নিকট যাহার যে বিধান বিধি আছে সেই বিধি দৃষ্টেই পূজা হইবে। ইহার মধ্যে সংশয় কি হইতে পারে। ঐ চিত্রপটেও দেবদেবীর অর্চ্চনা বিধিপূর্ব্বক করিলে হইতে পারে। বিধি বিধানে আছে ঘট পট হইতে পারে। মহাদেবীর ধ্যানদি সাঙ্গোপাঙ্গ সহিত যে পূজা বিধান আছে তাহা ঐ পটেও হয়। ঐ পটে যদি জীবের প্রাণীস্বত্ত্বার রূপ বলিয়া সংস্কার থাকে তাহা হইলে কৈবল্য অর্চ্চনা হইবে না। ঐপটকেও কৈবল্যই প্রকাশ জানিয়া উহার সমস্ত বিভূতি আর জগতে ত্রিধা বিকাশের দেবদেবী জানিবেন।”
এই অনুবাদাত্মক ব্যাখ্যায় আমরা দেখতে পাই— কৈবল্যশক্তি কেবল একটি গাছ নয়; এটি আশ্রমের আধ্যাত্মিক কেন্দ্রবিন্দু, যেখানে প্রাচীন পূজা-বিধি, মঙ্গলঘট ও দেবতার প্রতিমার সংহত ধ্যান—সবই একত্রে মিলে একটি পূর্ণাঙ্গ আচারাবিধি গঠিত করে। ঠাকুর নির্দেশ করেছেন যে যেভাবে চিত্রপটে বিধি মোতাবেক পূজা করা হয়, ঠিক তেমনি এখানেও সেই প্রথা অনুসৃত হবে; যদি কোনও ভিন্ন প্রকৃতির রূপ বা জীবের আচার-সংস্কার দেখা যায়, তাহা হলে কৈবল্য পূজা আলাদা রূপে বিবেচিত হবে।
পাঠ ও প্রয়োগ
1. কৈবল্যশক্তির পূজা একটি বিধিবদ্ধ আচার, যেখানে মঙ্গলঘট ও চিত্রপট—দুই অংশই গুরুত্বপূর্ণ।
2. পূজা-অভ্যাস ও ধ্যান-নির্দেশ মিলে যদি কোনো চরিত্রগত বা প্রাণীস্বরূপ প্রতিফলিত হয়, তা সতর্কভাবে বিচার করা দরকার।
3. ঠাকুরের বাণী অনুসারে, ঐ পটে যদি পূজিত দেব-দেবীকে বিবেচনা করে বিধি অনুপাতে পূজা করা যায়, তাহা হলে পূজা স্বীকৃত হবে।

No comments: